📘 WBCS Bengali Compulsory | বোধ পরীক্ষণ | Practice Set – ৩

WBCS Bengali Compulsory | বোধ পরীক্ষণ | Practice Set – ৩

SEO Title: WBCS Bengali Compulsory | সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বোধ পরীক্ষণ (Passage with Answers)

Focus Keyword: WBCS Bengali Unseen Passage Literature

Meta Description: WBCS Bengali Compulsory unseen passage on literature and culture. Includes full 10-marks answers and SEO-ready format.

Tags: WBCS Bengali Compulsory, Bodh Porikhan, Unseen Passage, Literature Passage for WBCS, Bengali Comprehension

🖋️ বিষয়: সাহিত্য ও সংস্কৃতি |

---

📝 অনুচ্ছেদ:

সাহিত্য কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি সমাজের আয়না। একটি জাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও চেতনা সাহিত্যেই প্রতিফলিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা থেকে শুরু করে শরৎচন্দ্রের উপন্যাস পর্যন্ত — প্রতিটি সাহিত্যকর্মে আমরা কালের স্পন্দন অনুভব করি। সাহিত্য মানুষকে শুধু আনন্দ দেয় না, বরং চিন্তাশীল করে তোলে, তার নৈতিক বোধকে জাগ্রত করে।

একটি সমাজ যখন সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করে, তখন তার সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হয় এবং নাগরিকরা আরও মানবিক হয়ে ওঠে। সাহিত্য আমাদের শেখায় সহানুভূতি, সহনশীলতা ও ন্যায়বোধ। আজকের দিনে যখন প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রবল প্রভাব ফেলছে, তখন সাহিত্যকে বাদ দিয়ে আমরা একতরফাভাবে যান্ত্রিক হয়ে উঠছি। তাই সাহিত্যচর্চা বজায় রাখা ও সাহিত্যপ্রেম লালন করা আজ আরও বেশি প্রয়োজন। সাহিত্য যেমন অতীতকে বোঝার মাধ্যম, তেমনি ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনাও বটে।

---

❓ প্রশ্নসমূহ (প্রত্যেকটি ১০ নম্বর):

1. লেখকের মতে সাহিত্য সমাজের জন্য কেন অপরিহার্য?
2. সাহিত্য কিভাবে একটি জাতির সংস্কৃতি ও পরিচয় বহন করে?
3. প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক জীবনে সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব কী?
4. লেখক “সাহিত্য অতীত বোঝায় এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ দেয়”—এই বক্তব্য দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?

🔹 (১) লেখকের মতে সাহিত্য সমাজের জন্য কেন অপরিহার্য?

সাহিত্য সমাজের একটি মৌলিক ভিত্তি, কারণ এটি কেবল বিনোদনের উপকরণ নয় — বরং মানবিক চেতনার বাহক। লেখকের মতে, সাহিত্য সমাজকে নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাশক্তি দেয়। এটি মানুষের মনের গভীরে সহানুভূতি, সহনশীলতা ও সৌন্দর্যবোধ গড়ে তোলে। যখন সমাজ সাহিত্যচর্চায় সক্রিয় থাকে, তখন সেই সমাজের নাগরিকরা আরও সংবেদনশীল, যুক্তিশীল ও সংস্কৃতিমনস্ক হয়ে ওঠে। সাহিত্য সমাজকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, আত্মপরিচয় গড়ে তোলে এবং মানুষকে কেবল ভোগবাদী জীবনের বাইরে নিয়ে যায়। এই কারণে লেখকের মতে, একটি সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে সাহিত্য অপরিহার্য।

---

🔹 (২) সাহিত্য কিভাবে একটি জাতির সংস্কৃতি ও পরিচয় বহন করে?

সাহিত্য জাতির সাংস্কৃতিক আত্মার বহিঃপ্রকাশ। লেখক এই অনুচ্ছেদে বুঝিয়েছেন যে, একটি জাতির ইতিহাস, লোকজ ঐতিহ্য, ভাষা, আচার-অনুষ্ঠান ও বিশ্বাস সাহিত্যেই সংরক্ষিত থাকে। যেমন রবীন্দ্রনাথের কবিতায় আমরা বাংলার প্রকৃতি ও মানবপ্রেম পাই, আর শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে দেখি ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজবাস্তবতা। এই সাহিত্যকর্মগুলিই আমাদের বলে দেয় একটি জাতি কেমনভাবে ভাবত, কেমনভাবে বাঁচত। সাহিত্য জাতির সংগ্রাম, আশা, হতাশা, বিশ্বাস — সব কিছুকে জীবন্ত করে তোলে। এভাবেই সাহিত্য শুধু সাংস্কৃতিক পরিচয় বহন করে না, বরং সেই পরিচয়কে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়।

---

🔹 (৩) প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক জীবনে সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব কী?

আধুনিক জীবনে প্রযুক্তি যেমন আমাদের গতি ও সুবিধা দিয়েছে, তেমনি তা আমাদের সম্পর্ক, অনুভব ও মননের গভীরতা কমিয়ে দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে সাহিত্যচর্চা অত্যন্ত জরুরি, কারণ সাহিত্য মানুষের ভেতরের ভাবনাকে জাগিয়ে তোলে। লেখকের মতে, সাহিত্য আমাদের কল্পনাশক্তি, সহানুভূতি ও আত্মবিশ্লেষণশীলতা তৈরি করে — যা প্রযুক্তির একঘেয়ে দুনিয়ায় প্রায় বিলুপ্তপ্রায়। প্রযুক্তির দৌলতে মানুষ যান্ত্রিক হলেও সাহিত্য তাকে মানবিক রাখে। তাই আধুনিক প্রযুক্তির যুগেও সাহিত্য আমাদের আত্মিক ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি মানুষের মনে ‘মানুষ’ হয়ে থাকার বোধ জাগিয়ে তোলে।

---

🔹 (৪) লেখক “সাহিত্য অতীত বোঝায় এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ দেয়”—এই বক্তব্য দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?

লেখকের মতে, সাহিত্য শুধু অতীত ঘটনার বিবরণ দেয় না, বরং তা সমাজ ও মানুষের মননকে বিশ্লেষণ করে। অতীত সমাজের রীতিনীতি, মূল্যবোধ ও জীবনধারার পরিচয় আমরা সাহিত্যের মাধ্যমে পাই। যেমন, বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস আমাদের ঔপনিবেশিক বাংলার চিত্র দেয়। কিন্তু সাহিত্য ভবিষ্যতের পথও দেখায় — কারণ এটি নৈতিক শিক্ষা দেয়, সমাজের অসংগতি তুলে ধরে এবং মানুষকে প্রশ্ন করতে শেখায়। সাহিত্য একটি বৌদ্ধিক আন্দোলনের জন্ম দেয়, যা ভবিষ্যৎ সমাজের ভিত তৈরি করে। এই অর্থেই সাহিত্য অতীত ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন।